সামরিক বাহিনীতে যোগদান করার সময় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দেশ রক্ষা করার শপথ নেয়। ঠিক তেমনটাই করে গেলেন স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে দুর্ঘটনার কবলে পড়া যুদ্ধবিমানটি থেকে জনমানুষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন তিনি।
গতকাল ৯ মে রাতে বাংলাদেশ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের এই বীর সেনার বীরত্বের কথা জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জহুরুল বিমান ঘাঁটি থেকে একটি যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণের জন্য উড্ডয়ন করে। তার কিছুক্ষণ পর কর্ণফুলী নদীর কনটেইনার টার্মিনাল এলাকায় যুদ্ধ বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পরে এই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।
জনমানুষ পরিপূর্ণ এলাকায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। সেই সাথে প্রাণ যেতে পারে অনেক নিরীহ মানুষের। ঠিক তাদের কথাই চিন্তা করে বিমানে অবস্থিত দুইজন পাইলট বিমানটিকে নিয়ে নদীর দিকে অগ্রসর হয়। বিমানটিতে আগুন ধরার ঠিক কয়েক মুহূর্ত আগেই দুইজন পাইলট ইজেক্ট করে বেরিয়ে আসেন। বিমানটি পতিত হয় কর্ণফুলী নদীতে। বেরিয়ে আসা পাইলট দুজনের মধ্যে একজন হলেন স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ। এবং অপরজন হলেন উইং কমান্ডার সোহান।
স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ
পরবর্তীতে তাদেরকে সাথে সাথে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার কিছুক্ষণ পরে স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদের মৃত্যু ঘটে। কিন্তু অপর পাইলট উইং কমান্ডার সোহাস সুস্থ আছেন।
দেশের বীরসেনার জীবন উৎসর্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শহীদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন ২০১০ সালে। পরবর্তী বছর ২০১১ সালে তিনি সোর্ড অফ অর্নার প্রাপ্তিসহ জিডিপি শাখায় কমিশন লাভ করেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে চাকরি কালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব রত ছিলেন। তিনি তার মেধা ও পেশাদারিত্বের জন্য আরও বেশ কিছু পুরস্কার লাভ করেন যেমন, মফিজ ট্রফি, বিমান বাহিনী প্রধান ট্রফি ও প্রশংসাপত্র।
শুধু তাই নয়, পাশের দেশ ভারতের বিমান বাহিনীতে করছে অংশগ্রহণ করে তিনি সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ, chief of air staffs trophy for best in flying (Indian air force) পান।
স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তার এই মৃত্যুতে পরিবার হারালো তাদের সন্তান এবং দেশ হারালো একজন দেশপ্রেমিক।