মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে মিল্টন সমাদ্দার একটি পরিচিত নাম। মানবতার সেবক হিসেবে পরিচিত মিল্টন সমাদ্দারের ফেসবুক পেজ গুলোতে মোট ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। তিনি অসহায় শিশু এবং বৃদ্ধদের জন্য গড়ে তুলেছেন “চাইল্ড এন্ড ওল্ড ইজ কেয়ার”। কিন্তু তিনি কি সত্যিই সমাজ কিংবা মানব সেবক?

রাস্তা থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে আশ্রয় দেন মিলটন সমাদ্দার। দুস্থ ব্যক্তিদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে বড়লোকদের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য প্রার্থনা করেন। এ নিয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোতে নানা ধরনের ভিডিও আপলোড করেন। মানুষজন তার আবেদনে যথেষ্ট সাড়া প্রদান করে। যার উদাহরণস্বরূপ বলা যায় তার ১৬ টি মোবাইল ব্যাংকিং এবং ৩ টি ব্যাংক একাউন্টে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকা করে জমা হয়। এই হিসাবের বাইরেও তো তার প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন রকম সাহায্য কিংবা অনুদান আসে।

মিল্টন সমাদ্দার তার এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এখন পর্যন্ত ৩ টি রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এ সবকিছু ঠিকঠাক ভাবেই চলছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে সাম্প্রতিক সময়ের একটি খবরকে কেন্দ্র করে। তার আশ্রমকে ঘিরেই ভয়াবহ একটি প্রতারণার জাল বুনেছেন তিনি।

প্রকৃতপক্ষে তিনি যে কয়েকজনকে লালন-পালন করেন তার চেয়ে অনেক বেশি হিসাবে দেখিয়েছেন। লাশ দাফনের হিসেবে রয়েছে অনেক বেশি গড়মিল। আর সবচাইতে ভয়ানক অভিযোগটি হলো, আশ্রয় দেওয়ার নাম করে তিনি মানুষের কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে দেন এমন অভিযোগ রয়েছে।

মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার

মিল্টন সমাদ্দার বাইরে অনেক মানবিক হলেও ভেতরে তার মধ্য কোন মানবিকতার ছিটে ফোঁটা নেই।। কিশোর বয়স থেকে রয়েছে অর্থের প্রতি তার প্রচন্ড লোভ। প্রতিবেশী, চিকিৎসক কিংবা সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় তার কাছ থেকে অপমান অপদস্থের শিকার হয়েছেন। এমনকি তার বিরুদ্ধে তার জন্মদাতা পিতাকেও মারধরের অভিযোগ রয়েছে।

মিল্টন সমাদ্দারের দাবি অনুযায়ী তিনি এখন পর্যন্ত ৯০০ টি মৃতদেহ দাফন করেছেন। তার মধ্যে ৬০০ জন তার আশ্রম থেকে মারা গিয়েছেন এবং বাকি ৩০০ জনকে রাস্তা থেকে এনে দাফন করেছেন। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় মিরপুর কবরস্থানে মিলটন সমাদ্দারের তত্ত্বাবধানে মাত্র ৫০ টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এছাড়া রায়েরবাজার কবরস্থানে ১৫ টি মৃতদেহ দাফন করার রেকর্ড রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের নামে। কিন্তু তার দাবি অনুযায়ী ৯০০ টি মরদ্রহের মধ্য বাকি ৮৩৫ টি মরদেহ তিনি কোথায় দাফন করেছেন?

কাউন্সিলর চামেলীর

এরকম নানা অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল। আশা করি সব অভিযোগের সত্যতা প্রমাণস্বরূপ অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে ভবিষ্যতে আর কোন মিলটন সমাদ্দারের তৈরি না হয় এবং মানুষ প্রতারণার শিকার না হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *