মিল্টন সমাদ্দার মানবতার সেবক হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোতে বেশ পরিচিত। তার সব মিলিয়ে পাঁচটি ফেসবুক পেজ রয়েছে যেগুলোতে ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। তিনি মূলত বৃদ্ধ নারী, পুরুষ, ভবঘুরে ও শিশুদেরকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন এবং তার আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় প্রদান করেন। এসব ভিডিও তৈরি করে তিনি সমাজের বিত্তশালী লোকদের কাছে অর্থ সাহায্য প্রার্থনা করেন।
মিলটন সমাদ্দারের বক্তব্য অনুযায়ী, অসহায় মানুষদের জন্য তার কাছে বিত্তশালীরা প্রায় প্রতি মাসে ৫০ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করে। এছাড়াও হাতে বা সরাসরি তো বিভিন্ন অনুদান রয়েছে। এ সকল অনুদানের টাকায় তিনি গড়ে তুলেছেন “চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার”। যেখানে তিনি অসহায় নারী শিশু বৃদ্ধদের আশ্রয় দেন।
কিন্তু সম্প্রতি মিলটন সমাদ্দারের বাইরের মুখোশের আড়ালে ভেতরের কিছু রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে জমি দখল সহ মানব শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
মিল্টন সমাদ্দারের পরিচয়
মিল্টন সমাদ্দারের ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকায় বেশ পারদর্শী ছিলেন। ছবি এঁকে জেলা পর্যায়ে বেশ কিছু পুরস্কার জিতেছেন। পড়াশোনায় খুব একটা পারদর্শী না হলেও প্রতারণায় বেশ পারদর্শী তিনি ছোটবেলা থেকে। ২০০০ সালে তিনি এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ফেল করেন। তারপরে বছর ২০০১ সালে পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন। উক্ত বছরই এই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নিজের জন্মদাতা পিতাকে পিটিয়ে আহত করেন তিনি।
মিল্টন সমাদ্দার তারপর ঢাকায় চলে আসেন। এখানে এসে একটি ওষুধ কোম্পানিতে আড়াই হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন। তারপর থেকে কিছুদিনের মধ্যেই একজন ফার্মেসি কর্মকর্তা হয়ে ওঠেন এবং হাসপাতালের নার্সদের সাথে সখ্য গড়ে তোলে চুরি করা শুরু করেন।
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে লাশ দাফনের গড়মিলের অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া লাশ ধোয়ার কাজে তিনি যেই মসজিদে পাঠাতেন সেই মসজিদের নিয়োজিত লোকেরা তারা নামে কিছু গুরুত্বর অভিযোগ করে। তাদের মতে মৃতদেহের শরীরে কিছু সন্দেহজনক কাটাছেড়ার দাগ দেখতে পান। সম্ভবত লাশের শরীর থেকে কোন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বের করে নেয়া হয়েছে।
এ সকল অভিযোগের ব্যাপারে মিল্টন সমাদ্দারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সবগুলো অভিযোগ কে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে সেগুলো প্রমাণ দেখাতে হবে এবং কোন হাসপাতালে আমি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করেছি সেটিও দেখাতে হবে।
