গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য সম্মতি দিয়েছে হামাস। কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় এ সম্মতিতে রাজি হয় হামাস। অবশ্য গাজায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল কোন মন্তব্য প্রকাশ করেনি। গাজার যুদ্ধ বিরতির খবর শুনে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে গাজায় অবস্থিত বাসিন্দারা।
গতকাল ৬ মে সোমবার সংবাদ সংস্থা আলজাজিরার একটি প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। আলজাজিরার মাধ্যমে জানা যায়, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোঃ বিন আব্দুর রহমান আল থানিয়াকে ফোনের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে, তিনি গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন। একই কথা তিনি মিশরের মন্ত্রী আব্বাস কামালকেও বলেছেন। আব্বাস কামাল মিশরের গোয়েন্দা বিষয়ক মন্ত্রী।
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরোধের মধ্যস্থতা করছে মূলত কাতার ও মিশর। অপরদিকে আমাদের এই বিবৃতির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কোন মন্তব্য এখন করবে না বলে জানা গেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কাছ থেকে।
২০০৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। যুদ্ধের শুরুর দিকে সাত অক্টোবর ইসরাইলের ঢুকে প্রায় ১ হাজার ২শ জনকে হত্যা করে হামাস সংগঠন। এছাড়া প্রায় আরও ২০০ এর অধিক লোককে তারা জিম্মি করে। তারপর থেকে তারা ইসরাইলে হামলা শুরু করে।
গাজায় যুদ্ধ বিরতিতে হামাসের সম্মতি
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিলার আরও জানিয়েছেন, আমেরিকার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সিআইইয়ের প্রধান এই যুদ্ধ বিরোধী নিয়ে কাজ করছে। তাছাড়া আমেরিকান প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের সবাই এই কাজের সাথে যুক্ত।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসে রাজি হওয়ার প্রস্তাবের তিনটি ধাপ রয়েছে বলে জানা গেছে।
জোরদার বিরতি প্রথম ধাপের মূলত ঘরহারা ফিলিস্তিনিদের গাজায় নিজেদের বাসায় ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের জীবন যাপনের জন্য বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী প্রদান করা হবে। তাছাড়া হামাসের কাছে যে সকল ইসরাইলে বন্দী আছে তাদের প্রত্যেক নারীর বন্দীর বিনিময়ে ৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে হবে ইসরাইলকে।
গাজায় যুদ্ধ বিরতির দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে পুরুষ বন্দীদের মুক্তি দেবে। বিনিময়ে ৫ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিতে হবে। তবে বন্দী বিনিময়ের সংখ্যা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। যুদ্ধবিতে তৃতীয় ধাপে থাকবে আগামী বছরগুলোতে গাজা কিভাবে পুনর্গঠন করা যায় তার ব্যাপারে পরিকল্পনা।
গাজায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে ইসরাইলে এখন পর্যন্ত কোন সম্মতির কথা জানা যায়নি। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, আমার যুদ্ধবিরতের যে প্রস্তাবে রাজি হয়েছে তাতে আমাদের দাবিগুলো পূরণ হয়নি। তবে যুদ্ধ বিরোধী চুক্তি নিয়ে আরো বেশি আলোচনার জন্য একটি মধ্যস্থতাকারী দল পাঠানো হবে।