বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমডি আব্দুল্লাহ ও এর নাবিক, ক্রু অবশেষে মুক্তি পেল সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে। গত ১৩ এপ্রিল শনিবার রাত বারোটায় জাহাজ ও নাবিকদের ছেড়ে দেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা।
তবে জাহাজ ও নাবিকদের বিনিময়ে জলদস্যুদের দিতে হয়েছে মুক্তিপণ। এই মুক্তিপণের পরিমাণ ঠিক কত সেটি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত জানা যায়নি। যদিও এ বিষয়ে আজ দুপুরে চট্টগ্রামে জাহাজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নাবিক ও ক্রুরা তাদের পরিবারের সাথে কথা বলেছে। গত ১২ই মার্চ ২০২৪ তারিখে আফ্রিকা হতে দুবাইয়ের দিকে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ।
জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর দফায় দফায় জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করার ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত গতকাল মুক্তিপণের অর্থ নির্ধারিত হওয়ার পর সমঝোতায় আসে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণের নির্ধারিত ডলার ভর্তি ব্যাগ উড়োজাহাজ থেকে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটির পাশে অপেক্ষারত দস্যুদের স্পিডবোটকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। কাঙ্খিত ডলার ভর্তি ব্যাগ পাওয়ার পর জলদস্যুরা জাহাজটি ছেড়ে চলে যায়। তারপর জাহাজটা নিয়ে নাবিকরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে রওনা দেয়।
জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পেলো নাবিকসহ সব জাহাজ
গভীর সমুদ্রপথে এই ধরনের পণ্যবাহী জাহাজগুলো কিভাবে জলদস্যুদের কবলে পড়ে? এ ব্যাপারে বিবিসিকে ধারণা দিয়েছেন জাহাজের দুজন সাবেক ক্যাপ্টেন।
তারা বলেছেন জাহাজগুলো পণ্য বোঝাই থাকার কারণে এদের গতি অনেক কম থাকে। এ কারণেই জাহাজগুলি জলদস্যুদের টার্গেটে পরিণত হয়। জলদস্যুুরা চার দিক থেকে ছোট ছোট স্পিডবোট নিয়ে জাহাজগুলোকে ঘিরে ফেলে। এভাবে আক্রমণ করলে তা মোকাবিলা করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। জলদস্যুরা জাহাজে উঠে সব রকমের কমিউনিকেশন সিস্টেম আগে বন্ধ করে দেয়। তারপর ডাকাতি ও জিম্মি করা শুরু করে।
সোমালিয়া জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা নাবিক ও ক্রুদের দেশে ফিরতে আরো ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে বলে জানা যায়। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের কে জানান, জাহাজটি প্রথমে আরব আমিরাতে কয়লা খালাস করবে। এতে সময় লাগবে প্রায় ১ সপ্তাহ।
মুক্তিপণের টাকার ব্যাপারে সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম গুলোতে একটি খবর প্রচার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে মুক্তিপণ বাবদ বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৫৫ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরদের। যদিও এই সংবাদের তেমন কোন ভিত্তি নেই।