বিগত কয়েকদিন ধরে সারা বাংলাদেশে ইন্টারনেটে গতি অনেক ধীর। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল (সিমিউই-৫) এর সংযোগ এবং সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। দেশের এই দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলটি সিঙ্গাপুরের সীমানা হতে পশ্চিম দিকে প্রায় ৪৪০ কিলোমিটার দূরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এর ফলে বাংলাদেশের কুয়াকাটা থেকে সিঙ্গাপুর অভিমুখী সকল ধরনের ট্রাফিক বর্তমানে ব্যাহত হয়েছে। কুয়াকাটায় এই সাবমেরিন ক্যাবলটি পুনরায় সংযোগ না দেওয়া পর্যন্ত সারাদেশে ইন্টারনেটের ধীরগতি থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সাবমেরিন কর্তৃপক্ষ।
গত শনিবার সাবমেরিন কর্তৃপক্ষের মহাব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান সাংবাদিকদেরকে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন যে গত ১৯ এপ্রিল শুক্রবার সাবমেরিন কেবলটি হঠাৎ করে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উক্ত সাবমেরিন ক্যাবলটি মেরামতের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব পুনরায় সংযোগ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
যেহেতু সিমিউই-৫ এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে তাই সিমিউই-৪ সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বর্তমানে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হচ্ছে। সিমিউই-৫ এর সকল প্রকার ব্যান্ডউইথ সিমিউই-৫ সাবমেরিন ক্যাবলে শিফটিং করা হয়েছে। সময়কেই পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা কামাল সাংবাদিকদের কে বলেন, বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া সিমিউই-৫ কেবল দিয়ে প্রায় ১৬০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আমরা পেয়ে থাকি। এই পুরো ব্যান্ডউতে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। কিন্তু সিমিউই-৫ কেবলটি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বর্তমানে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সিমিউই-৫ দিয়ে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। এই ক্যাবলটির মাধ্যমে সম্পূর্ণ ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করতে না পারায় সারা দেশে ইন্টারনেটে ধীরগতি দেখা দিয়েছে।
সারাদেশে ইন্টারনেটের গতি অনেক ধীর
কারণ সারা দেশে মিলিয়ে ব্যান্ডউইথের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৫ হাজার। এর মধ্যে প্রায় ১৬০০ জিবিপিএস এর ব্যান্ডউইথ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এদেরকে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা বলছেন, তাদেরকে গ্রাহকরা ফোন করে ইন্টারনেটের দীর্ঘতের ব্যাপারে অভিযোগ করছে। তারা গ্রাহকদেরকে ঘটনার বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করছে।
আমরা জানি ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথ গুলো সাবমেরিন এর সাহায্যে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে আনা হয়। ক্যাবল এর মাধ্যমে অন্য একটি দেশ হতে আমাদের দেশে ব্যান্ডউইথ এনে সাধারণ জনগণের কাছে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছিয়ে দেয়া হয়। প্রতিটি সাবমেরিন সমুদ্রের নিচে প্রচন্ড প্রেসারে থাকে। তাই হঠাৎ এ সকল সংযোগে গোলযোগ দেখা দিতে পারে। সাবরিন কেবল কর্তৃপক্ষ যত দ্রুত সম্ভব এটিকে পুনরায় সংযুক্ত করার চেষ্টা করছেন। সাবমেরিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ইন্টারনেটের ধীরগতির সমস্যা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে।